বাংলাদেশের মূল চালিকা শক্তি কৃষি। নিজস্ব খোরপোশ চাহিদা মিটিয়ে কৃষি এখন বহুবিধ আয়ের উৎস। দেশীয় বাজারে বাণিজ্যের বড় অংশীদারত্ব পেরিয়ে রপ্তানিমুখী হচ্ছে বাংলাদেশের কৃষি। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী কৃষিকে বেগবান করতে বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন কৌশল উদ্ভাবন করছেন। অন্যদিকে কৃষি সম্প্রসারণ

কর্মীদের সহযোগিতায় কৃষক নতুন নতুন প্রযুক্তি মাঠে বাস্তবায়ন করছে। প্রতিনিয়ত উন্নত জাত আবাদ, নতুন নতুন প্রযুক্তি প্রয়োগ হয়ে উঠেছে কৃষির নিত্য সঙ্গী। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপক হারে কৃষি উদ্যোক্তা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষিত তরুণ সমাজ কৃষির প্রতি ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছে। কৃষি উদ্যোক্তাদের আগ্রহ ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে কৃষির উন্নত ও অভিনব প্রযুক্তি এখন প্রতিনিয়ত চোখে পড়ছে। পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থা ও জলবায়ু পরিবর্তনের দরুণ কৃষি এখন নতুন সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। আগামীর কৃষিতে টিকিয়ে রাখতে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আমাদেরকে ভাবতে হচ্ছে পরিবর্তিত কৃষি নিয়ে। কৃষি ব্যবস্থাপনার এমন এক কৌশল টেকসই কৃষি। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও জলবায়ু বিবেচনায় সমৃদ্ধ আগামী প্রতিষ্টায় কৃষি হতে হবে টেকসই। টেকসই কৃষি এখন সর্বোজনমহলে আলোচিত ও বিভিন্ন দেশের বহুল প্রায়োগিক বিষয়। বাংলাদেশে টেকসই কৃষি নিয়ে বহুবিধ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। আগামীর কৃষিকে টেকসই ও লাভজনক করার লক্ষ্যে সরকার বহুবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরই ধারবাহিকতায় দেশের কৃষি সমৃদ্ধ যশোর অঞ্চলে বাস্তবায়িত হচ্ছে ‘যশোর অঞ্চলের টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ’ প্রকল্প। আগামীর সমৃদ্ধ কৃষি প্রতিষ্ঠায় যশোর অঞ্চলের ছয়টি জেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে এই প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রম।
কৃষক পর্যায়ে টেকসই প্রযুক্তি বাস্তবায়নের পাশাপাশি এর সাথে সংশ্লিষ্ট জনবলের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণের আয়োজন করে প্রকল্পটি। কৃষক প্রশিক্ষণ, কৃষি উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও কর্মকর্তা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যশোর অঞ্চলে দক্ষ টেকসই কৃষি বিষয়ক জনবল তৈরি হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ সেপ্টেম্বর যশোর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। গত ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রি. উদ্বোধনের মাধ্যমে যশোরের

হর্টিকালচার সেন্টারে পাঁচদিন ব্যাপী এই প্রশিক্ষণের যাত্রা শুরু হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আলমগীর বিশ্বাস প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন। পাঁচদিন ব্যাপী আয়োজিত এই প্রশিক্ষণে কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক, উপজেলা কৃষি অফিসার, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার ও কৃষি সম্প্রসারণ অফিসারবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। টেকসই কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞগণ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। আগামীর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কর্মকর্তাগণ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ হয়ে অর্জিত জ্ঞান কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগ করবেন বলে আশা করেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এই বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, “একটি সমৃদ্ধ ও টেকসই আগামী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ও যশোর অঞ্চলের কৃষিকে আরোও বেগবান করতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন বিষয়ে অধিকতর সমৃদ্ধ হবেন ও নিজ নিজ কর্ম এলাকায় তা প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষির পরিবর্তন ঘটাবেন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে যশোর অঞ্চলের কৃষি উন্নত হবে, সমৃদ্ধ হবে আগামীর কৃষি।